
নওগাঁ থেকে সিরাজুল ইসলাম ঃনওগাঁ নিয়ামতপুর উপজেলায় বোরো ধান কৃষকেরা শ্রমিক সংকটের কারণে মাঠ থেকে ঘরে ধান তুলতে পারছেন না। এদিকে বোরো ধান কাটার এসময় ধরে বৈরি আবহাওয়া শুরু হয়েছে। ঝড়ে নুইয়ে পড়েছে মাঠের ধান। অনেক খেতে পানি জমে গেছে। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, মাঠের ধান পেকে গেছে। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে তাঁরা ধান কাটতে পারছেন না।
বিশেষ করে নিয়ামতপুর উপজেলার এ বরেন্দ্র ভূমির লোকজনের প্রধান ফসল হলো ধান। চৈত্র মাস থেকেই এ এলাকায় দফায় দফায় ঝড়োবৃষ্টি হয়ে আসছে। অনেক জমিতে পানি জমি গেছ। বৃষ্টি হলেই অনেক মাঠের ধান পানিতে ভাসতে দেখা গেছে। এ অবস্থায় আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখলেই শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে উপজেলার হাজিনগর, চন্দননগর, ভাবিচা, শ্রীমন্তপুর, বাহাদুরপুর, পাড়ইল, রসুলপুর, নিয়ামতপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এখানো শত শত হেক্টর জমির পাকা ধান মাঠে পড়ে আছে। শ্রমিকের অভাবে এসব ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকেরা। আবার অনেক কৃষক পরিবারের সদস্য নিয়ে ধান কাটা ও মাড়াই কাজ শুরু করেছে।
উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর ধানকাটা শ্রমিকদের মোট ধানের ৫-৬ শতাংশ দিলেই হতো। এতে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটা বাবদ খরচ পড়তো প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। কিন্তু এবার কালবৈশাখী ঝড়ে খেতের ধানগাছ নুইয়ে পড়ায় ধান কাটতে বেশি শ্রম লাগায় ধানকাটা শ্রমিকেরা মোট ধানের ১০-১৫ শতাংশ দাবি করছে। কৃষকেরা তাঁদের দাবি অনুযায়ী ধান কাটতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। এতে এ বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে প্রায় চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
উপজেলার গাবতলী গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, ধান বেশি ভালো থাকলেও এ বছর বোরো ধানে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। সেচ খরচ, সার ও পরিচর্চা বাবাদ প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ৯ হাজার করে টাকা খরচ হয়েছে। তারপর ঝড়ে খেতের ধান নুইয়ে পড়ায় খেতের ১০-১২ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে। আবার শ্রমিক খরচ পড়ছে প্রতি বিঘায় প্রায় ৫ হাজার টাকা। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এবার কৃষকের অনেকের ক্ষতি হয়ে গেছে। সময়মতো মাঠের ধান ঘরে তুলতে না পারলে আরও ক্ষতি হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন,
উপজেলায় এবার বোরো আবাদ হয়েছে ২২,৫৫০ হেক্টর। এখন পর্যন্ত ধান কর্তন হয়েছে ৬০%। এবারে বৈরী আবহাওয়া ঝড় বৃষ্টির কারণে ফলন কম হচ্ছে। আর ধান কর্তনে শ্রমিকরা বেশি মজুরি নিচ্ছে। বর্তমানে আবহাওয়া, আরো বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কৃষকদের দ্রুত মাঠের ধান কেটে ফেলার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকেরা ধান কাটতে পারছেন না এমন কথা শোনা যাচ্ছে।
সিরাজুল ইসলাম
নিয়ামতপুর নওগাঁ
০১৭২৮৯৯৭৫৮৯